Advertisement

গাজীপুরে বৈদ্যুতিক তার পেঁচানো যুগলের লাশ পরিকল্পিত খুন বলে দাবি স্বজনদের

গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানাধীন দক্ষিণ ছয়দানার হাজির পুকুর এলাকার বিল্লাল মিয়ার ভাড়া বাড়ির একটি কক্ষ থেকে দুইটি লাশ উদ্ধার করেছে গাছা থানা পুলিশ।

নিহতরা হলেন সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ থানার সিমলা গ্রামের বাবুল শেখের ছেলে মোহাম্মদ বিল্লাল শেখ (২৫) ও গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার বীরপুরন্দ গ্রামের আব্দুল জব্বারের মেয়ে শ্যামলী আক্তার (২৭)।

জানা যায়, গাজীপুর মহানগরের ছয়দানা এলাকায় মা বাবা ভাই বোন সাথে নিয়ে মোহাম্মদ বিল্লাল শেখ আক্তার মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। আশা ছিল ইলেকট্রনিক্স এর কাজ শিখে বিদেশে যাবে। সেই মতেই চলছিল সবকিছু। হঠাৎ যেন কালো অন্ধকার নেমে এলো তাদের পরিবারে। রহস্যজনকভাবে লাশ মিলল পাশের বাসার বিল্লাল শেখের। এটা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না বিল্লাল শেখের বাবা এবং তার পরিবারের লোকজন। স্বজনের শোকে পরিবারের অনেক সদস্য বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন।

বিল্লাল শেখের মা বলেন, মৃত্যুর পরে আমার ছেলেটাকে আমি একটু চোখের দেখাও দেখতে পারি নাই! পুলিশের কাছে দেখতে চাইলে তারা বলেন, আগে কেন দেখে রাখেন নি? এখন দেখার দরকার নেই। আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে। আমি মামলাটা পর্যন্ত দিতে পারলাম না। আমি এর বিচার এই সরকারের কাছে চাই।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার পাশের বাসার একটি কক্ষে বিল্লাল শেখ ২৫ এবং শ্যামলী আক্তার ২৭ কে বৈদ্যুতিক তার পেঁচানো অবস্থায় মৃত পাওয়া যায়। শ্যামলী আক্তার বিল্লাল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থেকে প্রীতি সোয়েটার লিমিটেড নামের একটি পোষাক তৈরি কারখানায় কাজ করতেন। মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে পাশের কক্ষের ভাড়াটিয়া জুয়েল মিয়া ও অন্য রুমের লোক রান্না করতে উঠলে হঠাৎ পাশের রুম থেকে চিৎকারের শব্দ আসে। দরজা ভেতর থেকে বন্ধ দেখে সজোরে দুইজন মিলে ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে বিল্লাল মিয়া ও শ্যামলীকে প্রায় অর্ধ উলঙ্গ দেখে তারা বাহির থেকে দরজা লাগিয়ে দেন যাতে পালিয়ে যেতে না পারে। পরবর্তীতে তারা দরজা খুলে তাদের মৃত্যু অবস্থায় দেখতে পান বলে জানিয়েছেন পাশের লোকজন।

পরে তারা বাড়িওয়ালাকে বিষয়টি জানালে ঘটনাস্থলে তারা ছুটি আসেন বাড়ি মালিক বিল্লাল মিয়ার স্ত্রী। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা কেউ এই বাড়ি থাকি না। শুনেছি বিল্লাল শেখ নাকি মারা যাওয়ার আগের রাতে ছাদে বসেছিল। ঘটনাস্থল থেকে ছেলের কোন কাপড় পাওয়া যায়নি এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে এড়িয়ে যান।

উপ-পরিদর্শক মো. সুমন খান জানান, বৈদ্যুতিক তার পেঁচানো অবস্থায় যুগলের লাশ উদ্ধার করেছি। এ বিষয়ে গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলী মোহাম্মাদ রাশেদ বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে আমাদের ফোর্স ঘটনাস্থলে যায় এবং দুটি লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। পরে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে এবং একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন।