সৈয়দ ওবায়দুল হোসেন, বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাট সদর উপজেলার পাটরপাড়া এলাকায় মাদকসহ এক মাদক ব্যবসায়ী ও তার সহযোগীকে ধরিয়ে দেয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন এলাকাবাসী। আটকের পর জেল থেকে মুক্তি পেয়েই পাটরপাড়া এলাকার মাদক ব্যবসায়ী বাদল শেখ (৩০) ও তার লোকজন বিভিন্নভাবে হুমকী দিয়ে আসছে। এই মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে যারা সহযোগীতা করেছেন তাদের প্রত্যেকের নাম উল্লেখ করে বাগেরহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মিথ্যা মামলা করেছেন।
এ ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মাদক ব্যবসায়ী বাদল শেখ পাটরপাড়া গ্রামের মো. রশিদ শেখের ছেলে।
জানা যায়, গত ২০ আগস্ট রাত পৌনে ১২টার দিকে বাদল শেখ ও তার সহযোগী মো. জাহাঙ্গীর পাটরপাড়া এলাকায় ৬শত ৮০ গ্রাম গাজাসহ এলাকাবাসীর সহযোগীতায় পুলিশের হাতে আটক হয়। তাদের কাছ থেকে একটি ডিজিটার পরিমাপক যন্ত্রও পাওয়া যায়। আটককৃতরা স্থানীয় জনগন ও প্রশাসনের সামনে মাদক ব্যবসার কথা স্বীকার করে। প্রশাসন তাদের উদ্ধার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা দায়ের করে জেল হাজতে প্রেরন করে। মামলা থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েই বাদল শেখ ও তার লোকজন একাবাসীকে বিভিন্ন ভাবে হুমকী- ধামকী দিয়ে আসছে। এলাকার তানজীল হোসেন, শেখ জিয়াউর নিশানসহ ৮/১০ জন এলাকাবাসীর সহযোগীতায় মাদক ব্যবসায়ী বাদলকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে যারা সহযোগীতা করছে তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে বাগেরহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এলাকাবাসী জানান, বাদল শেখ মাদক সেবন ও বিক্রীর সাথে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত। ২০ তারিখে রাত সাড়ে ১০টা উল্লেখ করে বাগেরহাট কোর্টে যে মামলা করেছে তা সম্পূর্ন ভিত্তীহীন। এলাকাবাসী এ মাদক ব্যবসায়ী ও এদের সাথে যারা যারা সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
এ ঘটনায় উপস্থিত বাগেরহাট সদর উপজেলা সাবেক বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দিন মালেক বলেন, এলাকার মাদক ব্যবসায়ী আটক হয়েছে শুনে আমি পাটরপাড়া দক্ষিন পাড়া ঈদগাহ এর সামনে যাই। সেখানে বাদল শেখসহ আরো একজনকে মাদকসহ আটক দেখতে পাই। তারা মাদক সেবন ও বিক্রীর সাথে জড়িত বলে এলাকাবাসীর সামনে স্বীকার করে। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এখন শুনেছি বাদল শেখ বাদী হয়ে এলাকাবাসীর নামে হামলার মামলা দিচ্ছে, এ বিষয়টি সম্পূর্ন ভিত্তিহীন।
এ ঘটনায় বাগেরহাট সদর থানার এসআই মো. আবু হানিফা কামাল বলেন, ২০ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে জানতে পারি ২ ব্যক্তিকে মাদকসহ আটকিয়ে রেখেছে এলাকাবাসী। দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মাদক ব্যবসায়ী বাদল শেখ ও তার সহযোগী মো. জাহাঙ্গীর ৬শত ৮০গ্রাম গাজা ও ১টি ডিজিটার পরিমাপক যন্ত্র উদ্ধার করি। পরে তাদের নামে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে মামলা হয় ও জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির এক মাস পূর্তি উপলক্ষে আজ এই দিনে সারাদেশে কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
আন্দোলন চলাকালীন বাংলা ব্লকেট, মার্চ ফর জাস্টিজ, কমপ্লিট শাটডাউন এর মতো কর্মসূচীর কারণে গত ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের এক মাস পর শহীদদের স্বরণে আজ দেশব্যাপি পালিত হচ্ছে ‘শহীদি মার্চ’। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত কর্মসূচী মোতাবেক গাজীপুরেও পালিত হয়েছে এ দিবসটি।
এ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাছা থানার বিভিন্ন এলাকা হতে পদযাত্রা করে থানার সামনে মানববন্ধন কর্মসূচীতে অবস্থান নেয় ছাত্র-জনতা। ছাত্র ও যুব সমাজের কর্মসূচীতে একাত্বতা প্রকাশ করে সকল পেশার মানুষ অংশ গ্রহন করে।
মানববন্ধনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার পতন আন্দোলনে নিহত শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয় এবং ছাত্র জনতার ওপর গুলির নির্দেশদাতা গাছা থানার ওসি জিয়াউল ইসলামের প্রত্যাহার ও এ ঘটনার সাথে জড়িত সকলকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধন অনুষ্ঠানে আন্দোলনকারীরা বলেন, ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী সরকারের আমলে নিয়োগ প্রাপ্ত ওসি জিয়াউল ইসলাম আওয়ামী লীগ এবং বিভিন্ন দুষ্কৃতীকারীদের সাথে হাত মিলিয়ে চাদাবাজি ও গার্মেন্টসের ঝুট ব্যাবসার ভাগ পেয়ে আসছে। এবং বিভিন্ন হামলার সুষ্ঠু বিচার না পাওয়া সহ ছাত্র জনতার উপর গুলির নির্দেশদাতা ওসি জিয়াউল ইসলামের অবিলম্বে অপসারণ দাবি করছি।
পূর্বশত্রুতার জেরে গাজীপুর মহানগরীর গাছা থানার ৩২নং ওয়ার্ডের মৈরান এলাকায় একটি পরিবারের ৫ সদস্যের উপর হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুরসহ লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার (২৭আগস্ট) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনায় ভূক্তভূগী পরিবারের ইসমাইল (৪০) নামে এক ভুক্তভোগী সদস্য বাদী হয়ে মহানগরীর গাছা মেট্রোপলিটন থানায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন গত মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকাল সাড়ে দশটায় ভূক্তভূগী মৈরান এলাকায় তার নিজ বাড়ীর সামনে অবস্থান করাকালীন মহানগরীর ৩২নং ওয়ার্ডের মৈরান এলাকার সিরাজ মিয়ার ছেলে সফর আলী (৫৮), সফর আলীর ছেলে রিটন মিয়া (৪২), মৃত সিরাজ মিয়ার দুই ছেলে শুক্কুর আলী ওরফে বিমল (৪৪) ও শ্যামল মিয়া (৪৭), সফর আলীর ছেলে খোকন মিয়া (৪০), মৃত তাহের আলীর ছেলে ইমন আলী (২০), রিটন এর ছেলে সাজ্জাদ (২১), মনির হোসেন এর ছেলে হাসানসহ (২২) আরও অজ্ঞাত নামা ৮/১০ জন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক এ হামলায় অংশ নেয়।
প্রতিপক্ষরা ভূক্তভূগী পরিবারের সদস্যদের উপর দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র ( রামদা, ছেন, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, লোহার রড, লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় গুরুতর আহত হন ভূক্তভুগী পরিবারের কয়েকজন সদস্য। অভিযোগকারি উল্লেখ করেন অভিযুক্ত সফর আলীর হুকুমে শুক্কুর আলী ওরফে বিমল এর হাতে থাকা ধারালো রামদা দিয়ে ভূক্তভূগী ইসমাইলকে কোপ দেয়। সেই কোপ ফেরাতে গিয়ে ইসমাইলের জেঠাত ভাই আ. মতিন (৫০) দায়ের কোপে গুরুতর আহত হন। এসময় আব্দুল মতিন মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও তাকে রড দিয়ে বেধম মারধর করা হয়।
এসময় মারধর ফেরাতে এসে গুরুতর আহত হন ইসমাইলের জেঠি বৃদ্ধা মোসা. রেজিয়া বেগম (৬০)। মারধর হতে রক্ষা করতে এগীয়ে এসে আহত হন ভূক্তভূগী অভিযোগকারির চাচাতো বোন মোসা. ইতি (২৬)। এসময় অভিযুক্ত ইমন ইসমাইলের বুক পকেট থেকে ১০হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়ারও অভিযোগ করেন। মারধর ঠেকাতে এগিয়ে আসেন ভূক্তভূগী ইসমাইলের সহদর বোন মোসা. রহিমা (৪২)। তাকেও লক্ষ্য করে ধারালো অস্ত্রাঘাতে আহত করে প্রতিপক্ষরা। এছাড়াও অভিযুক্তরা ভূক্তভূগীর বসত বাড়ীঘরে হামলা ও লুটপাট চালিয়ে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক (৫০০০০০) টাকার ক্ষয়ক্ষতি সাধন করেছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
এঘটনায় দেশীয় অস্ত্রাঘাতে অন্তত ৫ জন গুরুতর আহত হয়ে চিৎকার চেচামেচির খবরে প্রতিবেশিদের সহায়তায় শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ভূক্তভূগী পরিবারের সদস্যরা। এ ঘটনা কাউকে জানিয়ে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করলে তাদের প্রাণ নাশ পরবর্তী লাশ গুম করে ফেলারও হুমকি দেয় প্রতিপক্ষরা বলেও অভিযোগ শুত্রে জানা গেছে। ভূক্তভূগী পরিবার জানায় চিকিৎসা গ্রহণ পরবর্তী স্থানীয় গণ্যমান্যদের অবগত করে থানায় অভিযোগে কিছুটা বিলম্ব হলো।
অভিযোগ দেয়ার পর থেকে ভুক্তভোগী পরিবার আতঙ্কে দিনযাপন করছেন। রাস্তাঘাটে দেখা হলে প্রতিপক্ষরা বলেন, তোদের বাড়িতে গিয়ে মারধর করেছি কিছুই করতে পারলি না।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় রিটন মিয়া ৩২ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের বতর্মান আহবায়ক সদস্য। একাধিক ডাকাতি মামলার আসামি।
এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দোষীদের আইনের আওতায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন ভূক্তভূগী পরিবারের স্বজনরা।
এ বিষয় গাছা থানার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উভয় পক্ষের অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা পেয়েছি। এ বিষয় মামলা করার জন্য বললে উভয় পক্ষ কিছু দিন সময় নেন বলে আমাদের জানান।
কালিমুল্লাহ ইকবাল, টঙ্গী, গাজীপুর : গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের হাসপাতাল থেকে জোর করে পদত্যাগ করানোর প্রতিবাদে টঙ্গীতে নিজ বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন সাভার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ। এর আগে তিনি মরহুম ডা. জাফর উল্লাহর স্ত্রীসহ কয়েকজন ডাক্তারের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করেন।
সোমবার (২৬ আগষ্ট) বিকেলে টঙ্গীর আনারকলি রোডে নিজ বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ।
সম্মেলনে বলা হয়, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফর উল্লাহর মৃত্যুর পর ট্রাস্টি মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন আহমেদ গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২৪ আগষ্ট একদল লোক এসে জোর করে তার নিকট থেকে কাজ না করার কথা লিখে একটি কাগজে স্বাক্ষর নেন। এই ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকার আশুলিয়া থানায় একটি জিডিও করেন ডা. নাজিম। জিডিতে মরহুম ডা. জাফর উল্লাহর স্ত্রী ডা. শিরিন হক, ডা. কনা চৌধুরী, ডা. ফরিদা ইয়াসমিন ও ডা. আবুল বাসারের নির্দেশে একদল বহিরাগত লোক জোরপূর্বক অফিসে প্রবেশ করে পদত্যাগের কাগজে স্বাক্ষর নেয়। কাগজে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সকল কাজ থেকে অব্যাহতি নেয়ার কথাও লিখানো হয়েছে।
সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আমিই একমাত্র বৈধ ট্রাস্টি। আমার কাছ থেকে জোরকরে কাজ না করার কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। আমাকে হেনস্তাও করা হয়েছে। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বর্তমান সরকারের নিকট ন্যায় বিচার দাবী করছি।
সম্মেলনে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশতাক, আমজাদ আলী সরকার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মো. আ. রাজ্জাক মিয়া সহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।
পূর্বধলা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : নেত্রকোনার পূর্বধলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গ্রাফিতি লিখন কর্মসূচির সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
বুধবার (২১ আগষ্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পূর্বধলা উপজেলার সম্বনয়ক নাকিব আহমেদ সেতু বাদী হয়ে পূর্বধলা থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আকাইদুল ইসলাম রোমান, উজ্জ্বল, সাবেক ছাত্রনেতা মুকুল কায়সার আকন্দ, সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হাবুল মিয়া, সাবেক ছাত্রনেতা শহিদুল ইসলাম আঙ্গুর, বাদশা, পূর্বধলা সরকারি কলেজে শাখার সাবেক সভাপতি হৃদয় খান নাঈম, নাজিম খান, রুহুল সরকার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম তালুকদার, এমপি আহমেদ হোসেনের সহদর ভাতিজা মিজানুর রহমান মুজিবর, সাবেক ছাত্রনেতা জাহিদ হাসান সাকিন, সাজ্জাদ হোসেন, মো. মনি, হেদায়েত উল্লাহ সিয়ামসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জন। স্থানীয় ও মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত ১ আগস্ট সন্ধ্যার পরে উপজেলার পূর্বধলা বালিকা উচ্চ রোডে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে গ্রাফিতি লিখন কর্মসূচি পালন করছিল।
এমন সময় হঠাৎ করে ৮/১০ টা বাইক দিয়ে আওয়ামীলীগ নেতারা দেওয়ালে লিখা অবস্থায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় মারধরের ঘটনায় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. তাজুল ইসলাম মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মামলার আসামিদের গ্রেফতার করতে চেষ্টা চালাচ্ছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার খাগাইল বাজারে মাদকবিরোধী মানববন্ধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১১ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেলে দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের তাওহীদি জনতার ব্যানারে গৌরিনগর মাদ্রাসার মুহতামিম হাফিজ মাওলানা ফয়জুর রহমানের সভাপতিত্বে মাওলানা হোসাইন আহমদের সঞ্চালনায় মাদকবিরোধী মানববন্ধন ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শায়খুল হাদিস আতাউর রহমান বলেন ইসলামে মাদককে হারাম করা হয়েছে। তাই আমরা মাদকের বিরুদ্ধে সর্বদা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আশাবাদী আমাদের সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সবাই ঐকমত পোষণ করে মাদক নির্মূলে কাজ করে যাবেন এবং বর্তমান প্রজন্মকে মাদকের হাত থেকে রক্ষা করবেন।
পাশাপাশি তিনি উপজেলা প্রশাসন ও উর্ধতন কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ করে বলেন মাদকের বিরুদ্ধে তারা যেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মাও. মুহাম্মদ আলী, মাও. সোহেল আহমদ, ডক্টর মাওলানা জিয়াউর রহমান, মাও. মাসহুদুর রহমান, মাও. আতিকুর রহমান, প্রবাসী নেতা হা. মাও. আনছার উদ্দিন, মো. ফরিদ আহমদ, যুবনেতা মো. লুকেছ আহমদ, মাও. ফজল উদ্দিনসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত তৌহীদি জনতাবৃন্দ।
গোলাম রসুল দিনার, গাজীপুর সদর মেট্রো থানা প্রতিনিধি : মতিউরের বিরুদ্ধে পঞ্চম দফা অনুসন্ধানে দুদক। ছাগলকাণ্ডে আলোচিত ইফাতের কথিত বাবা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য মো. মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চারবার অনুসন্ধান করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রতিবারই অনুসন্ধান পর্যায় থেকে শেষ হয়েছে কার্যক্রম। এক ধরণের অলিখিত ‘ক্লিনচিট’ দেয়া হয়েছে মতিউরকে। মতিউরের বিরুদ্ধে ফের অনুসন্ধান শুরু করতে চলেছে দুদক। ছাগলকাণ্ডের পর মতিউরের নামে-বেনামে শত শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য সামনে এসেছে। এছাড়া মতিউরের সন্তানদের বিলাসবহুল গাড়ি ও পাখি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এবার পঞ্চম বারের মতো তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হচ্ছে। এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত ১৮ বছরের ব্যবধানে ২০০৪, ২০০৮, ২০১৩ ও ২০২১ সালে মোট চারবার অনুসন্ধান করে দুদক। তবে নথিভুক্তির মাধ্যমে এসব অনুসন্ধানের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করে দুদক। অর্থাৎ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। পরে মতিউর রহমানকে নিয়ে কমিশনের অনুসন্ধান ও পরবর্তী কার্যক্রম থেমে যায়।
সূত্র জানায়, দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মইন উদ্দীন আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ৪ জুনের কমিশন সভায় মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে পঞ্চম বারের মতো অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একজন উপ-পরিচালককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধানী টিম গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে সদস্যরা কাজও শুরু করেছেন। সূত্র আরো জানায়, অনুসন্ধান টিমের পাশাপাশি পরিসমাপ্তি হওয়া চারটি অনুসন্ধান প্রতিবেদন ও তৎসংশ্লিষ্ট নথি খুঁজে বের করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নথি খুঁজে না পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার দায়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথাও জানানো হয়েছে।
এদিকে, গতকাল রবিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মো. মতিউর রহমানকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
১৯৯৬ ও ১৯৯৭- এই দুই বছর বেনাপোল বন্দর কাস্টমসের সহকারী কমিশনার ছিলেন মতিউর রহমান। ওই সময়ই তার বিরুদ্ধে বেপরোয়া ঘুস নেয়া ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ আছে, দুই বছর দায়িত্ব পালনকালে বেনাপোল বন্দর থেকেই তিনি অঢেল টাকা কামিয়েছিলেন। দেশে-বিদেশে অন্তত কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ করেছেন এই কর্মকর্তা। এসব সম্পদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পর দুদক তার বিরুদ্ধে প্রথম অনুসন্ধান টিম গঠন করে ২০০০ সালের দিকে। তখন দীর্ঘ সময় অনুসন্ধান ঝুলিয়ে রেখে ২০০৪ সালে অভিযোগ পরিসমাপ্তি করা হয়।
মতিউরের কত সম্পদ রয়েছে, সেটি নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজীপুরে তার বিপুল সম্পত্তি রয়েছে। এছাড়া মতিউরের শেয়ারবাজারে বিপুল বিনিয়োগের খবরও বের হয়েছে। তিনি সরকারি কর্মকর্তা হলেও শেয়ারবাজারে প্লেসমেন্ট শেয়ারের বড় ব্যবসায়ী। তিনি নিজেও বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি বিভিন্ন কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) ওই কোম্পানির মালিকদের কাছ থেকে কম দামে কিনে নিয়ে পরে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করে অনেক মুনাফা করেছেন।
নিজের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমার ধারণা মানুষ হিংসা থেকে এই ধরণের কাজ (অভিযোগ দিচ্ছে দুদকে) করছে। সহকারী কমিশনার থেকে যখন ডেপুটি কমিশনার হচ্ছি তখন আমার বিরুদ্ধে বেনামে চিঠি লেখা হয়েছে। দুদকে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। দুদকের শক্তিশালী কর্মকর্তা আক্তার হামিদ এর তদন্ত করেছেন। ডেপুটি কমিশনার থেকে জয়েন্ট কমিশনার হওয়ার সময় ও একই ধরনের বেনামি চিঠি দেয়া হয়। আবার তদন্ত হয়। জয়েন্ট কমিশনার থেকে এডিশনাল কমিশনার হওয়ার সময়ও একই কাজ হয়। এখন আবার আমি এনবিআরের সদস্য হচ্ছি, নানাভাবে আমাকে এখন হয়রানি করা হচ্ছে।
একাধিক সূত্র ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, শেয়ারবাজারে নিজ নামে অর্ধশত কোটি টাকা বিনিয়োগ আছে মতিউরের। ছাগলকাণ্ডে আলোচিত ইফাতকে কিনে দিয়েছিলেন প্রাডো, প্রিমিও ও ক্রাউনের মতো চারটি বিলাসবহুল গাড়ি। কিনে দিয়েছেন দামি দামি পাখিও। এসব ছবি ফেসবুকে হয়েছে ভাইরাল।