Advertisement

এই বিজয় ছাত্র-জনতার, এই বিপ্লব বেহাত হতে দেয়া যাবে না : খেলাফত মজলিস

স্টাফ রিপোর্টার: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ১৫ বছরের স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়াতে মহান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ছাত্র-জনতাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শহরে বিজয় মিছিল করেছে খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখা।
খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব এবিএম সিরাজুল মামুন বলেন, গত জুলাই মাসের প্রথম দিকে শুরু হওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে এদেশের ছাত্র-জনতার গণআকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট-স্বৈর শাসন ব্যবস্থার অবসান ঘটেছে। আমরা মহান আল্লাহর দরবারে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমরা এই আন্দোলনসহ বিগত সময়ে যত মানুষ অন্যায়ভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন তাদের মাগফিরাত কামনা করছি। যত মানুষ আহত হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন তাদেরকে আবারো স্মরণ করছি এবং সুস্থতা কামনা করছি। সাম্প্রতিক আন্দোলন সংগ্রামে সাহসিকতার সাথে রাজপথে অংশগ্রহণ করার জন্য আমরা সকলকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, এই বিজয় ছাত্র-জনতার। এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে নতুনভাবে বিনির্মাণের শপথ নিতে হবে। এই অর্জন কুক্ষিগত হতে দেয়া যাবে না। ছাত্র-জনতাকে তা পাহারা দিতে হবে। আমরা অবিলম্বে আন্দোলনরত ছাত্র ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আহ্বান জানাচ্ছি। একটি কুচক্রী মহল আন্দোলনে ঢুকে পড়ে সহিংসতা চালিয়ে ছাত্রদের আন্দোলনকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছে। ছাত্র-জনতা এসব কিছু রুখে দিবে, এই বিপ্লব বেহাত হতে দিবে না ইনশাআল্লাহ।
৬ আগস্ট মঙ্গলবার বাদ যোহর, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি হাফেজ মাওলানা আহমদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিজয় মিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী শেখ শাব্বীর আহমাদের পরিচালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন- খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ মহানগর সহ-সভাপতি অধ্যাপক শাহ আলম, ডা. শামীম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস আহমদ, জেলা সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, মহানগর সহ-সাধারণ সম্পাদক হাফেজ কবির হোসাইন, হানিফ কবির বাবুল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা সভাপতি নুর মোহাম্মদ খান, জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক মুফতী আব্দুল গনী, ফতুল্লা থানা সভাপতি কামরুল হাসান পায়েল, সদর থানা সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হাফেজ মুহাম্মাদ আওলাদ, বন্দর থানা সভাপতি মুফতী আবুল কাসেম, সোনারগাঁও থানা সভাপতি মুফতী সিরাজুল ইসলাম, ইসলামী যুব মজলিসের মহানগর সভাপতি প্রভাষক মাইদুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্র মজলিসের মহানগর সভাপতি শরীফ মাহমুদ, জেলা সভাপতি তৌফিক বিন হারিছ প্রমুখ।

টঙ্গীতে জামায়াতের উদ্যোগে বিজয় ও শোকরানা মিছিল অনুষ্ঠিত

শেখ হাসিনার পতন ; অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আলোচনায় আছেন যারা

এস এম ইকবাল হোসেন, সম্পাদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালানোর পর দেশের ক্ষমতা বুঝে নিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

সোমবার বিকাল ৪টায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে সেনাপ্রধান এ তথ্য জানান।

সেনাপ্রধান বলেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা দেয়া হবে। তবে এই মুহূর্তে আমি সমস্ত দায়িত্ব নিচ্ছি। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীসহ দেশবাসীর সহযোগিতা চাই।

সেনাপ্রধানের ভাষণের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব কে নেবেন এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মনে। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানসহ যাদের নাম আলোচনায় আসছে তারা হলেন-

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এই সরকারে আরও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী, বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ইকরামুল হক, সাবেক পরিবেশ সচিব ড. মাহফুজুল হক, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিস ট্রাস্টের সাবেক পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন, সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা, বিজিবির সাবেক ডিজি লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মঈনুল ইসলাম, নিউএইজ-এর সম্পাদক নুরুল কবির, সাবেক সচিব ফজলুল কবির খান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) গোলাম হেলাল মোরশেদ খান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সাবেক ভিসি অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, আইনজীবী শাহদীন মালিক, অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর।

শেষ মুহূর্তে দিল্লির সহযোগিতাও পেলেন না শেখ হাসিনা

এস এম ইকবাল হোসেন, সম্পাদক : ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে শেখ হাসিনাকে সরিয়ে নেয়া হয়। 

এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানাও ছিলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তারা হেলিকপ্টারে চড়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দেন।

সোমবার দুপুরে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর গণভবন দখলে নেয় ছাত্র-জনতা। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও দখল করে নেয় তারা।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা গণভবন থেকে নিরাপদ স্থানে চলে যান। শেখ হাসিনা যাওয়ার আগে একটি ভাষণ রেকর্ড করে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে সুযোগ তাকে দেয়া হয় নি।

সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, শেষ সময়ে শেখ হাসিনা নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তাকে উদ্ধারের জন্য ভারত থেকে বাংলাদেশে বিমান পাঠানো হবে না বলে জানিয়ে দেয় নয়াদিল্লি।

ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের আকাশসীমায় ভারত কোনো বিমান পাঠাতে পারে না। কারণ, তাতে আইন লঙ্ঘিত হতে পারে। ভারত থেকে জানানো হয়, শেখ হাসিনাকে আগে ভারতে পৌঁছতে হবে। তারপর সেখান থেকে তাকে দিল্লিতে নেয়খ যেতে পারে।

হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে দিল্লি পর্যন্ত যাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে তার নিকটবর্তী অবতরণ স্থান ছিল আগরতলা বিমানবন্দর। সেখানেই নেমেছেন শেখ হাসিনা। আগরতলা থেকে তাকে বিশেষ বিমানে করে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গেছে।

আত্রাইয়ে শেখ হাসিনার পদত্যাগে জনসাধারণের আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ

এমরান মাহমুদ প্রত্যয়, নওগাঁ : শেখ হাসিনার পদত্যাগে নওগাঁর আত্রাইয়ে বিভিন্ন এলাকায় বিজয় মিছিল, মিষ্টি বিতরণ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিভিন্ন পেশার সাধারণ মানুষ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন সংবাদে খুশিতে বিজয় মিছিল করছে ও মিষ্টি বিতরণ করেছে সাধারণ মানুষ।

সোমবার বিকেল ৩টার দিকে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে বের হয় হাজারো জনতা। এরপর উপজেলার জিরো পয়েন্ট ও উপজেলা চত্বরে জড়ো হয় কয়েক হাজার মানুষ। বিজয় মিছিল থেকে শেখ হাসিনার পালানো নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মুখর করে তোলে পরিবেশ।

আনন্দ উল্লাসে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছে সর্বস্তরের জনগণ। বিজয় মিছিল থেকে শহরে আওয়ামী লীগের সকল ব্যানার ফেস্টুন অফিস ভাঙচুর করা হয়। পুরো শহর জুড়ে মোটরসাইকেল মহড়া দিচ্ছে সরকারবিরোধী বিভিন্ন দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনতা।

পাহাড়ি ঢলে তলিয়েছে সড়ক; সাজেকে  আটকে পড়েছে কয়েকশো পর্যটক

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি : রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাচাঁলং নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আবারো ভয়াবহ বন্যার আশংকা দেখা দিয়েছে।

এরই মধ্যে সাজেক দিঘীনালা সড়কসহ অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বাঘাইছড়ির সাথে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সাজেকে আটকে পড়েছে ৩৮৪ পর্যটক।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার পর্যটকদের আটকে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সাজেকে গত দুইদিনে ৩৮৪ জন পর্যটক বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়েছে।

টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত ছয় মাসে তৃতীয় বারের মতো বন্যার কবলে পড়তে যাচ্ছে বাঘাইছড়ি।

এদিকে মারিশ্যা দিঘিনালা সড়ক ও আসপাশের পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় ধসের আশংকা দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে এছাড়া মারিশ্যা দিঘিনালা সড়কে যানচলাচলে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।

কাপ্তাই হ্রদে গোসল করতে নেমে ২ বন্ধুর সলিল সমাধি; আহত-১

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি : কাপ্তাই হ্রদে গোসল করতে নেমে পানির নীচে তলিয়ে দুই কিশোরের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মৃত দু’জন হলো অর্ণব চৌধুরী (১৫) ও এডিশন সাহা (১৬)।
এই ঘটনায় গুরুত্বর আহত শিবম দাশ গুপ্ত নামের আরো একজনকে মুমূর্ষ অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে রেফার্ড করেছে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে। হতাহত তিনজনই বন্ধু বলে জানা গেছে। রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শওকত আকবর খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শিরা জানিয়েছেন, শুক্রবার দুপুরে তিন কিশোর বন্ধু রাঙামাটি শহরের তবলছড়িস্থ ভূট্টোর স’মিলের সামনের সিঁড়ি ঘাটে কাপ্তাই হ্রদে গোসল করতে নেমে পানির নীচে তলিয়ে যায়।
এসময় স্থানীয়রা বিষয়টি দেখেই তিনজনকে খুঁজতে পানিতে নেমে পড়ে। ঘন্টা খানেকের মধ্যেই তিনজনকে উদ্ধার করে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অর্ণব চৌধুরী ও এডিশন সাহাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় মুমুর্ষ অবস্থায় শিবম দাশ গুপ্তকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে রেফার্ড করে।
জানা গেছে, মারা যাওয়া অর্ণব চৌধুরী রাঙামাটি শহরের তবলছড়িস্থ ৪নং ওয়ার্ডের মাস্টার কলোনীর মৃত বাবুল চৌধুরীর সন্তান। আর এডিশন সাহা আর্ট কাউন্সিল কলোনীর অমিত সাহার সন্তান। এছাড়াও আহত শিবম দাশ গুপ্ত ৩নং ওয়ার্ডের জেল রোড এলাকার নয়ন দাশের সন্তান।
শুক্রবার বন্ধের দিনে মর্মান্তিক এই ঘটনায় পুরো শহরেই শোকের ছায়া নেমে আসে।

আন্তর্জাতিক গৃহশ্রমিক দিবস ২০২৪ ; ৪০ লাখ গৃহকর্মীকে শ্রমআইনে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান অক্সফ্যামের

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : বাংলাদেশের প্রায় ৪০ লাখ গৃহকর্মীকে শ্রমআইনে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতির আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অক্সফ্যাম। আন্তর্জাতিক গৃহকর্মী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে রাজশাহীতে গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় আয়োজিত র‍্যালি, পথসভা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এই আহ্বানসহ ৯টি দাবি তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটি। সোমবার রাজশাহী শহরে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হন ‍দুই শতাধিক গৃহকর্মী, সরকারী কর্মকর্তা, উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।
দিনব্যাপী আয়োজনে গৃহকর্মীদের সুরক্ষায় যে ৯টি দাবি তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো হলো; শ্রম আইনে গৃহকর্ম পেশাকে অন্তর্ভূক্ত করা; গৃহকর্মীদের সামাজিক মযার্দা ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়া; গৃহকর্মে শিশুশ্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা; গহকর্মীদের প্রতি সকল প্রকার নির্যাতন বন্ধ করা; গৃহকর্মীদের নির্ধারিত কর্মঘন্টা, সাপ্তাহিক ছুটি, ন্যূনতম মজুরী নির্ধারণ করা, ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫ এর যথাযথ বাস্তবায়ন; গৃহকর্মীদের শোভন কাজ সংক্রান্ত আইএলও কনভেনশন ১৮৯ অনুসমর্থন, গৃহকর্মীদের মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় কাযর্কর উদ্যোগ গ্রহণ  এবং গৃহকর্মীর উপর নির্যাতনকারীর দ্রুত শাস্তির প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা।
গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় আযোজিত র‌্যালী ও পথ সভার উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। তিনি বলেন, ‘গৃহকর্মীরা সমাজের বিচ্ছিন্ন কোন অংশ নয়। আমরা দেখেছি গৃহকর্মীরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। বৈষম্য ও নির্যাতনের  শিকার হলেও তারা সঠিক বিচার পান না। গৃহকর্মীরা নিয়োগের সময় কোনো চুক্তিপত্র পান না; দেয়া হয় না নির্ধারিত ছুটি। মাতৃত্বকালীন ছুটিও তাদের নেই। গৃহকর্মীদের পিছিয়ে রেখে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত সম্ভব নয়। তাই গৃহকর্মীদের সংবেদনশীল আচরণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক পেশায় যুক্ত করতে সকলকে কাজ করা জরুরি।’
পথসভায় গৃহকর্মী মর্জিনা সুলতানা বলেন, ‘আমরা আপনার পরিবারের দায়িত্ব নিই বলেই  নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারেন। তবে আপনারা  আমাদের প্রাপ্য দিতে চান না। ৯৩ শতাংশ গৃহকর্মী মাতৃত্বকালীন ছুটি পান না।”   গৃহকর্মীর উপর নির্যাতনের আইনি কার্যক্রম সম্পন্নে হয়রানির বিষয়টি তুলে ধরে তিনি আরো বেলন, “শ্রমিক হিসেবে কাজ করেও নিজেদের শ্রমিক বলতে পারি না। কারণ আমরা শ্রমআইনেই অন্তভুক্ত নই।” আমরা গৃহকর্মকে শ্রমআইনের অন্তর্ভুক্তি চাই।”
র‍্যালি ও পথসভা শেষে ‘গৃহকর্মী পেশায় নিয়োজিত নারী শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায়: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অক্সফ্যাম ও সহযোগী প্রতিষ্ঠান। ওই অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধের উপস্থাপন করেন অক্সফ্যাম ইন বাংলাদেশ এর প্রকল্প সমন্বয়ক তারেক আজিজ। । বিশ্বব্যাংকের ২০২১ এর তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশের ৪০ লাখ গৃহকর্মীর কাজের মূল্য প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার। যা জিডিপির অন্তর্ভুক্ত নয় ।  এছাড়াও সুনীতি প্রকল্পের পরিচালিত ২০২২ এর গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী, দেশের ৮৪ শতাংশ গৃহকর্মী দারিদ্র্যসীমার নীচে বাস করেন। ৮৭ শতাংশ  অনাবাসিক/খন্ডকালীন গৃহকর্মী কোনো সাপ্তাহিক ছুটি পান না। মাতৃত্বকালীন ছুটি পান না ৯৩ শতাংশ এবং কোনো গৃহকর্মীর নিয়োগপত্র নেই।’
গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ফিন্যান্স) জনাব মো. রশীদুল হাসান, পিপিএম, উপস্থিত ছিলেন। তিনি গৃহকর্মীদের সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগোর পাশাপাশি নাগরিকসমাজকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানগুলোতে অতিথি হিসেবে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক এটিএম গোলাম মাহবুব, বিভাগীয় শ্রত অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম, সুজনের সভাপতি সফিউদ্দিন আহমেদ, রাসিক কাউন্সিলর কামরুজ্জামান কামরু, গৃহকর্মিদের পক্ষে কুলসুম খাতুন, জান্নাতুল ফেরদৌসসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর প্রতিনিধিবৃন্দ।
উল্লেখ্য, ২০১১ সাল থেকে প্রতি বছর জুন মাসের ১৬ তারিখ গৃহকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক গৃহকর্মী দিবস পালিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছর মাসব্যাপী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচারণা ও কার্যক্রম পরিচালনা করছে অক্সফ্যাম। ইতোমধ্যে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই পেশায় নিয়োজিত প্রায় ১৮,০০০ নারী গৃহকর্মীদের পেশাগত ও জীবন দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে শোভন কাজের সুযোগ সৃষ্টি এবং সার্বিক জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর নারকীয় হামলা ও নির্যাতনের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে এবি পার্টির

স্টাফ রিপোর্টার : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যনারে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারী দল ছাত্রলীগের নারকীয় হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি।

আজ সোমবার এক বিবৃতিতে এবি পার্টির আহবায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী ও সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ছাত্ররা সরকারের করা প্রজ্ঞাপনের সপক্ষেই আন্দোলন করছিল। সরকার পক্ষের আইনজীবীরা আদালতে কোটা বাতিলের পক্ষেই যুক্তিতর্ক তুলে ধরার কথা। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সরকার দলীয় নেতারা বৈষম্যমূলক কোটার পক্ষে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতিকে জটিল করে তুলেছেন। সবশেষে জনসমর্থনহীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে ছাত্রদেরকে পরিকল্পিতভাবে উত্তেজিত করেছেন। আজ আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক সরাসরি নির্দেশ দিয়ে ছাত্রলীগের অস্ত্রধারীদের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের উপর নৃশংস কায়দায় ঝাপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদি সরকার সবসময় নির্যাতনের মাধ্যমে যৌক্তিক আন্দোলনকে দমন করে থাকে। এর আগে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত কিশোর ছাত্রদের ওপরও তারা ছাত্রলীগের হেলমেট বাহিনী লেলিয়ে দিয়েছিল। আজও একই রকমভাবে বিপুল সংখ্যক বহিরাগত কিশোর গ্যাং ও যুবলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের দিয়ে দুই শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীকে আহত করা হয়েছে। তারা ছাত্রীদের ওপরও নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে এমনকি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া আহত ছাত্রদের উপরও নির্দয় আক্রমণ করেছে।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রতি হামলা, মামলা, আদালতকে হীনস্বার্থে ব্যবহার ও দমন-পীড়নের পথ পরিহার করার দাবি জানান। পাশাপাশি অবিলম্বে সমাজের অনগ্রসর শ্রেণি, প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ আদিবাসীদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা রেখে বাকী ৯৫ শতাংশ মেধাবীদের জন্য উম্মুক্ত করার মাধ্যমে

কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া এবং হামলাকারীদের বিচারের দাবি করেন।

এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।

ত্বকের পরিচর্যায় অ্যালোভেরা উত্তম হারবাল

বিশেষ প্রতিনিধি : দুর্ভাগ্যবশত আমরা কেউ ত্বকের ঝুলে পড়া রোধ করতে পারি না। কারণ এটি বার্ধক্যের একটি অংশ। সঠিক যত্নের অভাবেও ত্বক আগেভাগে বুড়িয়ে যেতে পারে। এই সমস্যা থেকে উত্তরণে রয়েছে প্রাকৃতিক উপায়। সঠিক যত্ন নিলে ত্বকের ভাঁজ কিংবা ঝুলে যাওয়া চামড়া ইত্যাদি সমস্যা দূর করা সম্ভব।

ত্বক কেন ঝুলে পড়ে? ‘জার্নাল অব কিউটেইনিয়াস প্যাথলজি’তে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘ইলাস্টিন’ একটি প্রোটিন যা ত্বকে স্থিতিস্থাপকতা দান করে। বয়সের সঙ্গে ত্বকের ‘ইলাস্টিন’এর পরিমাণ কমে। ফলে কোমলতা ও নমনীয়তা হ্রাস পায়।

কোলাজেনের হ্রাসের ফলে ত্বকের নিচের চর্বিও কমে আর শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের ফলে ত্বক সংকুচিত হয়। যে কারণে ত্বকে দেখা দেয় ভাঁজ ও ঝুলে পড়ার সমস্যা। প্রকৃতিতে এমন উপাদান আছে যা ত্বক টান টান করতে সহায়তা করে।

মধু : ত্বক ‘ডিটক্সিফাই’ বা দূষণমুক্ত করে, স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায় ও ভাঁজ দূর করতে সহায়তা করে। পর্যাপ্ত পরিমাণ মধুর সঙ্গে সামান্য পানি যোগ করতে হবে। ত্বকের ভাঁজযুক্ত স্থানে মিশ্রণটি মেখে ২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

শসা : ‘ফিটোটেরাপিয়া’ সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী- শসাতে আছে ইলাস্টিন, হায়ালুরনিক অ্যাসিড এবং ত্বক আর্দ্র ও মসৃণ রাখার ক্ষমতা। শসার খোসা ছাড়িয়ে ব্লেন্ড করে এর রস আলাদা করে নিতে হবে। তুলার বলের সাহায্যে রস নিয়ে ত্বকে ব্যবহার করে ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।

ক্যাফেইন : কফিতে থাকা ক্যাফেইন ত্বককে বয়সভিত্তিক অক্সিডেটিভ চাপ থেকে সুরক্ষিত রাখে। ‘অক্সিডেটিভ মেডিসিন অ্যান্ড সেলুলার লংজিভিটি জার্নাল’-এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়- ক্যাফেইন অতিবেগুনি রশ্মির কারণে হওয়া বয়সের ছাপ কমাতে পারে। কফির বীজ পানি যোগ করে পেস্ট তৈরি করে আলতো করে ত্বকে গোলাকারভাবে ব্যবহার করতে হবে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।

অ্যালোভেরা : ত্বকের পরিচর্যায় সবচেয়ে উত্তম হারবাল অ্যালোভেরা। এর নির্যাসে আছে ত্বকের স্থতিস্থাপকতা বাড়িয়ে টানটান করার ক্ষমতা। এ ছাড়া কোলাজেন ও হায়ালুরনিক অ্যাসিড উৎপাদনে সহায়তা করে। অ্যালো-ভেরার পাতা থেকে জেল আলাদা করে নিতে হবে। সেটা ত্বকে ব্যবহারের পর ১০ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলতে হবে।