Advertisement

প্রশাসনিক ব্যর্থতা স্বীকার করে স্বেচ্ছায় অধ্যক্ষের পদত্যাগ ; বেতন না পেয়ে বিপাকে কাজী আজিমউদ্দিন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা

সোনালী ভোর প্রতিবেদক : গাজীপুরের কাজী আজিমউদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ মো. হারুন অর রশিদ হাওলাদার গত ২৭ আগস্ট স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন। ঐদিন বিকেলে কলেজের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক, গাজীপুর বরাবরে লেখা পদত্যাগ পত্রে তিনি নিজের প্রশাসনিক ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করেছেন।

বর্তমানে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক পদে বহাল না থাকায় সভাপতি ও অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছেন কাজী আজিমউদ্দিন কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীগণ।

অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায়, অধ্যক্ষ হারুর অর রশিদের স্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী করার সুবাদে ভিসি হারুনুর রশিদের অনুকম্পায় প্রথমে ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। পরে অধ্যক্ষ পদ শূন্য হলে সেই পদে ভারপ্রাপ্ত থাকাবস্থায় প্রসেসিং করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক সিনিয়র শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত না দিয়ে নিজের পছন্দের শিক্ষককে বসিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করে অধ্যক্ষ পদ ভাগিয়ে নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও শিক্ষকদের সাথে অসদাচরণ, শিক্ষক গ্রুপিং তৈরি, ফেইসবুক প্রোফাইলে আওয়ামী দলীয়করণের ছবি, ছাত্রদের ব্যবহার করে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করা, বিভিন্ন পরীক্ষার সময় অন্য কলেজ থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে দূর্ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যে দূর্নীতি দমন কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে। নিয়োগ বাণিজ্য, অর্থ আত্মসাৎ করে অঢেল সম্পদের মালিক হওয়াসহ মোট আঠারোটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করছে দূদক কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি।

ভাওয়াল বদরে আলম সরকারী কলেজের অধ্যক্ষকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে রিপোর্ট পেশ করেছেন। তবে শুধু সম্পদের তথ্য বিষয়ক আরো বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করার জন্য ডিজি অফিস আরেকটি চিঠি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যক্ষ বিএম আব্দুল হান্নান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে শিক্ষক কর্মচারীদের কলেজ থেকে প্রাপ্ত বেতন দেয়া বন্ধ করে দেন তিনি। ফলে এমপিওহীন শিক্ষক কর্মচারীগণ গত দুই মাস যাবৎ বেতন না পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। নতুন জেলা প্রশাসক যোগদান করার সাথে সাথে এর একটা সুষ্ঠু সমাধান চান শিক্ষক কর্মচারীগণ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হওয়ার পর ছাত্রলীগ দিয়ে এই আন্দোলন দমন করার চেষ্টা করার অভিযোগও রয়েছে অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ এর বিরুদ্ধে। গত ৫ আগস্ট ২০২৪ তারিখে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে পদত্যাগে বাধ্য হন বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ।

তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। অভিযোগকারীর নাম ও মোবাইল নাম্বারের কোনো অস্তিত্ব নেই। তিনি নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেন।”

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *