Advertisement

শেখ হাসিনার পতন ; অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে আলোচনায় আছেন যারা

এস এম ইকবাল হোসেন, সম্পাদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালানোর পর দেশের ক্ষমতা বুঝে নিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

সোমবার বিকাল ৪টায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে সেনাপ্রধান এ তথ্য জানান।

সেনাপ্রধান বলেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা দেয়া হবে। তবে এই মুহূর্তে আমি সমস্ত দায়িত্ব নিচ্ছি। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীসহ দেশবাসীর সহযোগিতা চাই।

সেনাপ্রধানের ভাষণের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব কে নেবেন এমন প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মনে। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানসহ যাদের নাম আলোচনায় আসছে তারা হলেন-

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এই সরকারে আরও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী, বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ইকরামুল হক, সাবেক পরিবেশ সচিব ড. মাহফুজুল হক, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিস ট্রাস্টের সাবেক পরিচালক ব্যারিস্টার সারা হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন, সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা, বিজিবির সাবেক ডিজি লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মঈনুল ইসলাম, নিউএইজ-এর সম্পাদক নুরুল কবির, সাবেক সচিব ফজলুল কবির খান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) গোলাম হেলাল মোরশেদ খান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সাবেক ভিসি অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, আইনজীবী শাহদীন মালিক, অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর।

শেষ মুহূর্তে দিল্লির সহযোগিতাও পেলেন না শেখ হাসিনা

এস এম ইকবাল হোসেন, সম্পাদক : ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে বঙ্গভবন থেকে একটি সামরিক হেলিকপ্টারে করে শেখ হাসিনাকে সরিয়ে নেয়া হয়। 

এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানাও ছিলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তারা হেলিকপ্টারে চড়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দেন।

সোমবার দুপুরে শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর গণভবন দখলে নেয় ছাত্র-জনতা। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও দখল করে নেয় তারা।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা গণভবন থেকে নিরাপদ স্থানে চলে যান। শেখ হাসিনা যাওয়ার আগে একটি ভাষণ রেকর্ড করে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে সুযোগ তাকে দেয়া হয় নি।

সূত্রের বরাতে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, শেষ সময়ে শেখ হাসিনা নয়াদিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু তাকে উদ্ধারের জন্য ভারত থেকে বাংলাদেশে বিমান পাঠানো হবে না বলে জানিয়ে দেয় নয়াদিল্লি।

ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের আকাশসীমায় ভারত কোনো বিমান পাঠাতে পারে না। কারণ, তাতে আইন লঙ্ঘিত হতে পারে। ভারত থেকে জানানো হয়, শেখ হাসিনাকে আগে ভারতে পৌঁছতে হবে। তারপর সেখান থেকে তাকে দিল্লিতে নেয়খ যেতে পারে।

হেলিকপ্টারে ঢাকা থেকে দিল্লি পর্যন্ত যাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে তার নিকটবর্তী অবতরণ স্থান ছিল আগরতলা বিমানবন্দর। সেখানেই নেমেছেন শেখ হাসিনা। আগরতলা থেকে তাকে বিশেষ বিমানে করে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গেছে।

আত্রাইয়ে শেখ হাসিনার পদত্যাগে জনসাধারণের আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ

এমরান মাহমুদ প্রত্যয়, নওগাঁ : শেখ হাসিনার পদত্যাগে নওগাঁর আত্রাইয়ে বিভিন্ন এলাকায় বিজয় মিছিল, মিষ্টি বিতরণ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিভিন্ন পেশার সাধারণ মানুষ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন সংবাদে খুশিতে বিজয় মিছিল করছে ও মিষ্টি বিতরণ করেছে সাধারণ মানুষ।

সোমবার বিকেল ৩টার দিকে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে বের হয় হাজারো জনতা। এরপর উপজেলার জিরো পয়েন্ট ও উপজেলা চত্বরে জড়ো হয় কয়েক হাজার মানুষ। বিজয় মিছিল থেকে শেখ হাসিনার পালানো নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মুখর করে তোলে পরিবেশ।

আনন্দ উল্লাসে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নেমেছে সর্বস্তরের জনগণ। বিজয় মিছিল থেকে শহরে আওয়ামী লীগের সকল ব্যানার ফেস্টুন অফিস ভাঙচুর করা হয়। পুরো শহর জুড়ে মোটরসাইকেল মহড়া দিচ্ছে সরকারবিরোধী বিভিন্ন দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনতা।

পাহাড়ি ঢলে তলিয়েছে সড়ক; সাজেকে  আটকে পড়েছে কয়েকশো পর্যটক

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি : রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতের ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাচাঁলং নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আবারো ভয়াবহ বন্যার আশংকা দেখা দিয়েছে।

এরই মধ্যে সাজেক দিঘীনালা সড়কসহ অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বাঘাইছড়ির সাথে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে সাজেকে আটকে পড়েছে ৩৮৪ পর্যটক।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিরীন আক্তার পর্যটকদের আটকে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সাজেকে গত দুইদিনে ৩৮৪ জন পর্যটক বেড়াতে গিয়ে আটকে পড়েছে।

টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গত ছয় মাসে তৃতীয় বারের মতো বন্যার কবলে পড়তে যাচ্ছে বাঘাইছড়ি।

এদিকে মারিশ্যা দিঘিনালা সড়ক ও আসপাশের পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় ধসের আশংকা দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয়দের আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে এছাড়া মারিশ্যা দিঘিনালা সড়কে যানচলাচলে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।